
নিয়াজ মোর্শেদ সিয়াম, বিশেষ প্রতিনিধি: সাধারণত প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার যেমন কেক, পেস্ট্রি, বিস্কুট, তেলে ভাজা খাবার সহ অনেক খাবারেই এর দেখা মিলে। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহার্য সয়াবিন তেলেও দেখা মিলেছে এই ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটের। এই নিয়ে বিস্তারিত জানার আগে ট্রান্সফ্যাট কী তা জেনে নেওয়া দরকার।
ট্রান্সফ্যাট মূলত ক্ষতিকর চর্বির একটি রূপ যা রক্তের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে বাড়িয়ে দেয় খারাপ কোলেস্টেরল। আর রক্তে এই খারাপ কোলেস্টেরল বাড়তে থাকলে তা ধীরে ধীরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অর্থাৎ, প্রতিদিনের খাবারে ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি দীর্ঘকালীন শারীরিক সমস্যার অন্যতম কারণ।
এবার আসা যাক সয়াবিন তেল নিয়ে সম্প্রতি করা গবেষণার ফলাফলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্র্যান্ট পাবলিক হেলথ স্কুলের ১৩ জন গবেষক মিলে ২০২১ সালে দেশের নানান স্থানে প্রাপ্ত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এবং নন-ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেলের মোট ১৫২১টি নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা কার্য শুরু করে। সেই গবেষণার ফলাফলে উঠে আসে ৬৭% নমুনায় মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট উপস্থিত। অর্থাৎ, প্রতিদিনের রান্নার অপরিহার্য উপাদান সয়াবিন তেলের মাধ্যমে দেশের প্রায় সকলেই গ্রহণ করছেন হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি উপাদান।
সুস্থ থাকতে এই শঙ্কাজনক পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এবার চাই বিকল্প ব্যবস্থা। কিন্তু এতো এতো সয়াবিন তেলের নমুনায় যদি ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি থাকে তবে এর বিকল্প কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক। সয়াবিন তেলের বিকল্প হিসেবে আমাদের সামনেই রয়েছে বেশ কিছু উপাদান, শুধু চাই একটু সচেতনতা।
রান্নার তেল হিসেবে সরিষার তেল হতে পারে এক চমৎকার বিকল্প। ঘানিতে ভাঙানো এক পেষণের সরিষার তেল রান্নার জন্য বহুকাল আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি খাঁটি ঘি বা এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলও ব্যবহার করা যায়। তবে ব্যবহারের আগে অবশ্যই নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন এইসব উপাদানের প্রক্রিয়াজাতকরণ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না। কেননা সয়াবিন তেলের উপর করা গবেষণা নিয়ে গবেষকগন জানিয়েছেন যে ভোজ্যতেল পরিশোধনের সময় ব্যবহৃত উচ্চতাপের কারণেই এতে ট্রান্সফ্যাট বৃদ্ধি পায়। তাই কোল্ড প্রেসড তেল বা কাঠের ঘানিতে ভাঙানো তেল তুলনামূলক নিরাপদ।