নন্দন পার্ক বন্ধ হয়ে যেতে পারে যে কোন সময় রাজু আহম্মেদ :

গাজীপুর জেলার বিনোদন স্থান এর মধ্যে অন্যতম নন্দন পার্ক যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
মালিকপক্ষের দ্বন্দ্বে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদনের স্থান আশুলিয়া-কালিয়াকৈরের সীমান্তে গড়ে তোলা নন্দন পার্ক বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দু-একটি দল এলেও অন্য সময় দর্শনার্থী সংখ্যা থাকে প্রায় শূন্যের কোঠায়। এতে বিপাকে পড়েছেন ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরের কিছু অংশে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদেরও পাওনা রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে জন্য তারা মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ৮০ বিঘার জমিতে ২০০০ সালের শুরুতে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয় নন্দন পার্কের। এতে অংশীদার ছিলেন ১৪ জন। বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া মশিউর রহমান ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরে বোর্ড মিটিংয়ে ওই বছর সেলিম হোসেনকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বেলাল হক। অভিযোগ উঠেছে, গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদের সহায়তায় পার্কের অংশীদার সেলিম মিয়া, সিরাজুল হক ও ফখরুল ইসলাম দেওয়ান চেয়ারম্যান বেলাল হকসহ অন্য পরিচালকদের পার্কে ঢুকতে বাধা দেন। তারা প্রায় ১৮ মাস সেখানে যেতে পারেননি। তারা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করে ১০১৯ সালের শুরুর দিকে ফের পার্কের দায়িত্ব নেন বেলাল হক। এসব তথ্য জানালেও নাম প্রকাশে রাজি হননি কয়েকজন অংশীদার ও কর্মকর্তা। তারা বলেন, ২০০০ সালে নন্দন পার্কের কার্যক্রম শুরু হলেও বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সালে। তখন মালিকানা নিয়ে কোনো ঝামেলা ছিল না। তবে ব্যবসায়িকভাবেও খুব একটা সাফল্য আসেনি। বেলাল হক নেতৃত্বে এসে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান করার চেষ্টা করেন। গত আগস্টের পর অবৈধভাবে পার্কের দখল নেন সিরাজুল হক। এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হলে নন্দন পার্কে দর্শনার্থী আসা কমে যায়।পার্কের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, চেয়ারম্যান বেলাল হকসহ কয়েকজন অংশীদার ২০২২ সালের শেষ দিকে নতুন করে নিজেদের টাকায় পার্কে নতুন রাইডস স্থাপন করেন। তাদের চেষ্টা ছিল দর্শনার্থী আকর্ষণের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সিরাজুল হক। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন আরও দুই অংশীদার।অংশীদার ও কর্মীরা জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল হক পালিয়ে সাভার এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তিনি নন্দন পার্কের চেয়ারম্যান বেলাল হকসহ কয়েকজনের নামে ঢাকার একটি আদালতে সিআর মামলা করেন। ১৭অক্টোবর বেলাল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত চার মাসে বেলাল হকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া ও কালিয়াকৈর থানায় একাধিক মামলা করেন সিরাজুল হক।
নন্দন পার্কের চেয়ারম্যান বেলাল হকের অভিযোগ, সিরাজুল হক অতীতে আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও কালিয়াকৈর থানার ওসির মাধ্যমে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে পার্কের ক্ষতি করেছেন। এখন সিরাজুলসহ কয়েকজন তাঁকে তাড়াতে প্রশাসনের সাহায্য নিয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার সহায়তায় অমানবিক আচরণ করছেন।
সিরাজুল হকের বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে বার্তা দিলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *