
মোহাম্মদ সুমন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, সাংবাদিক অধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটি: আজ আমরা সকলেই সংঘবদ্ধ হয়ে একটি মহৎ উদ্যেগকে সফল করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছি। এই সংঘঠনটি আমি আপনি একা করা সম্ভব নহে সবার সহযোগিতা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করি।
আমরা যারা মিডিয়াকর্মী সাংবাদিক আছি দেশের প্রতিটি জায়গায় নির্যাতিত, অবহেলিত, মারধরের শিকার হচ্ছি এমনকি অনেক সাংবাদিককে খুন গুম করা হচ্ছে এর বিচার হচ্ছেনা। কেনো জানেন? আমরা একতা নই৷ আমাদের মধ্যে অনেক বিভাজন। আর সেই কারনেই আমাদের সংঘঠনের ঐক্যের ডাক৷
১। একটি সংগঠনের প্রাপ্তি হলো সংগঠনটির প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রচেষ্টার যোগফল।
২। সংগঠন হল একটি সুতোয় এক এক করে এক একটা ফুল দিয়ে গাঁথা মালার মত যেখানে এক একটি ফুল হল এক একজন শিল্পী। আলাদা ভাবে ফুল সুন্দর তো হয়, তবে মালা হয় তখনই যখন সেই সুতোয় এক এক করে অজস্র ফুলের সমাবেশ ঘটানো হয়। ফুলের মালার সৌন্দর্য নির্ভর করে মালা যে গাঁথছেন তার নিষ্ঠা, ধৈর্য, ধ্যান, দক্ষতা, ভালবাসার উপরে। এইসবের কোন একটা বাদ গেলে মালা তো গাঁথা যাবে কিন্তু সেই মালা সুন্দর হবে না, থাকবে না তাতে কোন আকর্ষণীয়তা। একটি সংঘঠনও ঠিক তেমন।সংগঠনকে যারা ধরে রাখেন, এক এক করে যুক্ত করেন তাদের মাঝে যদি নিষ্ঠা, ধৈর্য, ধ্যান, দক্ষতা, ভালবাসা না থাকে তবে সেই সংগঠন সফল হবে না। হবে না একটা সুন্দর, সাবলীল, যোগ্য সফল সংগঠন।

৩। সংগঠনকে কোন বাদ্যযন্ত্রের সাথেও তুলনা করা যায় যা কিনা সুর তুলে। বীণা, তানপুরা, বেহালা, গীটার এমন অনেক বাদ্যযন্ত্র যার থাকে অনেক গুলো তার। বাদ্যযন্ত্রের সেই তারগুলোর একটাও যদি ছিঁড়ে যায় তবে সুর তোলা সম্ভব নয়। বাদ্যযন্ত্রই বাতিল হয়ে যায়। একটি সংগঠন হচ্ছে এমনই কোন বাদ্যযন্ত্রের মত যার তারগুলো হচ্ছে এক একটি এক একজন শিল্পী। যতদিন তারগুলো জুড়ে থাকে, ততদিন সুর তুলে যায় সুরের দেবির আরাধনার মত। সংগঠন বয়ে চলে সেই সুরের মত। কখনও মধুর, কখনও করুন, কখনও সুরেলা, কখনও ছন্দবদ্ধ।
৪। সংগঠনকে ছবি আকার সাথেও তুলনা করা সম্ভব। একটা রঙ্গে কখনও ছবি হয় না। অজস্র রঙের সম্মিলিত প্রয়োগেই গড়ে উঠে একটি সুন্দর ছবি। শুধু সাদা কাগজের সাদা রঙ্গে তো ছবি হয় না। সেখানে নানা রঙের মিলন মেলা গুছিয়ে, সুন্দরভাবে প্রয়োগ করতে হয়। দল বলতেও আসলে এমন কিছুই বোঝায়। যেখানে নানা রঙ হয় এক একজন শিল্পী আর ছবিটা হয় একটি সংগঠন। রঙ ছাড়া যেমন ছবি হয় না। তেমনি শিল্পী ছাড়া সংগঠন হয় না। সবচেয়ে বড় বিষয় ছবি আকতে যেমন শিল্পীর প্রয়োজন হয়, মালা গাথার যেমন দক্ষ মালা গাথুনি থাকতে হয়, বাদ্যযন্ত্র বাজাতে যেমন বাদক প্রয়োজন হয়, তেমনি একটি সংগঠন পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হয় এমনই কোন দক্ষ, উদ্যমী, উদ্যোগী, পরিশ্রমী পরিচালক বা নির্দেশকের। তবেই একটি সংগঠন পরিপূর্ণতা পেতে পারে।
৫। এক পরিবারের সদস্যরা যেমন একে অপরের সম্পর্কে ভাল করে জানে যে সে কি পছন্দ করে, কি অপছন্দ করে, কোন সময় কি করে, কি তার ভাল লাগে, কখন ঘুমায়, কখন খায়, কখন বাইরে যায়, তাদের বন্ধু কে ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক কিছু। তেমনি একটি সংগঠনকেও একটি পরিবারের মত পরিচালনা করা উচিৎ। দলের কোন সদস্যের কি সমস্যা, কোন সদস্যের কি পরিস্থিতি, কোন সদস্য কি করছে, কোন সদস্য কি করবে, কোন সদস্য অসুস্থ, কোন সদস্য অভাবে ভুগছে, কোন সদস্য সময় দিতে পারছে না এই সব কিছু সংগঠনের প্রতি সদস্যের জানা উচিৎ। একজন সদস্য ভয়াবহ কোন রগে আক্রান্ত অথবা কোথায় নিযাতের শিকার। অথচ সে নিজে না জানালে সংগঠন সেই বিষয়ে জানবে না এটা কেমন কথা? দলের সকল সদস্যদের উচিৎ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। এমন একটা নির্দিষ্ট দায়িত্ব সংগঠনের কোন সদস্যকে দিয়ে দেয়া উচিৎ যে সংগঠনে কে আসছে বা কে আসছে না সেই সব খোঁজ রাখা। না আসলে কেন আসছে না, কি হল, সব ঠিক আছে তো, অসুস্থ তো নয়, মারা তো যায় নি এমন খোঁজ খবর নেয়া। রোজ না হলেও সপ্তাহে একবার। সপ্তাহে না হলেও মাসে একবার।
৬। সংগঠনের প্রত্যেক সদস্যের উচিৎ অন্য সদস্যদের সাথে এমন আন্তরিক একটা সম্পর্ক গড়ে তোলা যে সেই সদস্য নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা বা কষ্টের কোথাও অবলীলায় শেয়ার করতে পারবে। শেয়ার করতে পারলে সদস্যের ব্যবহার বা আচরনের সকল রহস্য ধরা যায়। আর একজন সেই রহস্য ধরতে পারলে তার উচিৎ সংগঠনের সবার সাথে তা নিয়ে আলোচনা। দলীয় পর্যায়ে গিয়ে নিজের সংগঠনের সদস্যকে সাহায্য করা। তাকে ছোট করে নয়, বরং নিজ পরিবারের সদস্য রুপে তার সকল সুযোগ সুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখা। আর এসব গুনাবুলি আমাদের সংঘঠনের মধ্যে থাকলে কখনো আমরা পিছিয়ে থাকবোনা এমনি কোন অপশক্তি আমাদের রোধ করতে পারবেনা৷ আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ হাতে হাত রেখে৷ আপনারা প্রত্যেকেই আজ থেকে যার যার জেলা থেকে কাজ শুরু করে দিন৷ আমরা খুব শীগ্রই একটা শক্তিশালী সংঘঠনের পরিবার হবো ইনশাআল্লাহ৷