মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ টঙ্গী সিটি করপোরেশনের কার্যকরী পদক্ষেপ নেই

আলফাজ দেওয়ান গাজীপুর প্রতিনিধি : শিল্প নগরী গাজীপুরের টঙ্গীতে দিনভর কর্মব্যস্ততার পর সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় মশার অত্যাচার। শ্রমিক অধ্যুষিত এ এলাকায় দিন দিন মশার যন্ত্রণা যেন বেড়েই চলেছে। মশারি টানিয়ে, কয়েল জ্বালিয়ে, ইলেক্ট্রিক ব্যাট কিংবা স্প্রে করেও সুফল মিলছে না। মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও সিটি করপোরেশনের নেই কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ।

টঙ্গী অঞ্চলের ১৫টি ওয়ার্ডে মশক নিধনের জন্য উন্নত প্রযুক্তির ফগার মেশিন রয়েছে। তবুও নেই তেমন কোনো কার্যকরী উদ্যোগ। এতে চরম ক্ষুব্ধ নগরবাসী।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নগরীর গাজীপুরা, সাতাইশ, আউচপাড়া, দত্তপাড়া, এরশাদনগর,মধ্য আরিচপুর, মাছিমপুর, মিরাশপাড়া, ভরান, পাগার শিলমুনসহ বিভিন্ন এলাকার ড্রেন, পুকুর, ডোবা, নালা-নর্দমার কচুরিপানা ও ময়লা পরিষ্কার না করায় সেগুলো এখন মশা উৎপাদনের খামারে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নগরীতে মশার উপদ্রব খুব বেশি। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে কিউলেক্স মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ট নগরবাসী। অনেকেই ফ্ল্যাটের জানালায় নেট ব্যবহার করা সত্ত্বেও মশার অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। নিচতলা থেকে শুরু করে দশ তলা পর্যন্ত সর্বত্রই মশার সমান উপদ্রব।

টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের আঙিনা ও ভেতরে মশা ভন ভন করছে। কয়েলের ধোঁয়ায় রোগীদের কষ্ট হওয়ায় কয়েলও জ্বালানো যাচ্ছে না। রোগী ও তাদের সঙ্গে থাকা স্বজনরাও মশার যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। হাসপাতালের তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন শতাধিক রোগী। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।

টঙ্গী ৫৬ নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা সজিব বলেন,আগামীতে নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধীগন হাজিরা দিতে আসবেন তাদের প্রয়োজনে।কিন্তু জনগনের প্রয়োজনে তাদের পাওয়া যায় না।

এসময় স্থানীয় বাসিন্দা জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি,গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ আলফাজ দেওয়ান বলেন-গাজীপুর মাটি ও মানুষের প্রাণ প্রিয় নেতা প্রয়াত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান স্যারের সুযোগ্য সন্তান গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি ভাইয়ের নির্দেশে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জনাব গাজী সালাউদ্দীন ভাই ৫৬নং ওয়ার্ডবাসীর পাশে থাকবেন।ইনশাআল্লাহ এ নিয়ে তিনি নিজেই উদ্যোগ নিয়েছেন আপনারা শীঘ্রই দেখবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন মূলত কিউলেক্স মশার উপদ্রব চলছে। স্ত্রী কিউলেক্স মশার মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তির শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ফাইলেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। এর কারণে হাত-পা ফুলে যায়, বারবার জ্বর হয়। এছাড়াও ম্যালেরিয়া ও চিকনগুনিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে বর্ষা মৌসুমে আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়তে পারে এডিস মশার উপদ্রব। প্রতি বছর এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। তাই বর্ষা মৌসুমের আগেই মশক নিধনে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। এছাড়া মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতা ও বাড়াতে হবে।

শহীদল আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমরা নিয়মিত হাসপাতাল ও আশপাশের আঙিনা পরিষ্কার করে রাখি। তবুও মশার উপদ্রব কমছে না। হাসপাতালে রোগীদের জন্য রাতে মশারি দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনকে মশক নিধনের ওষুধ ও ফগার মেশিনের জন্য জানিয়েছি। তারা শিগগিরই হাসপাতালে স্প্রে করবেন বলে জানিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, শীতের শেষে আবহাওয়া উষ্ণ হতে শুরু করেছে। এ সময় মশা বংশবিস্তার ঘটায়। ফলে মশার উপদ্রব এখন অনেক বেশি। মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া, গাদসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। সামনে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে। তাই মশা নিধনের জন্য সিটি করপোরেশনকে এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) এ এস এম সফিউল আজম বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম ইতোমধ্যেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন গ্রহণ করেছে। দ্রুতই মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *