
মোহাম্মদ সুমন চৌধুরী, গাজীপুর সিটি: গাজীপুরে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কেয়া গ্রুপের শ্রমিকরা। আজ সোমবার (৩ মার্চ) সকালে কারখানার সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানান, গত ২ জানুয়ারি মহানগরীর জরুন এলাকার কেয়া গ্রুপের চারটি কারখানা আগামী ১ মে থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সেই সময়ে বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকের সঙ্গে হিসাবের অমিল, কাঁচামাল অপর্যাপ্ততা ও কারখানার উৎপাদন কার্যক্রমের অপ্রতুলতার কারণ দেখিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দেয়। কারখানাটিতে ৬ হাজার শ্রমিকের মতো রয়েছেন।তাদের বেতনসহ শ্রম আইন অনুযায়ী সব পাওন আগামী মে মাসে পরিশোধ করার কথা ছিল।তবে হঠাৎ করেই সোমবার সকালে কারখানার চেয়ারম্যান সই করা একটি নোটিশে দুই হাজার ২০৩ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, এতদ্বারা কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড (নিট কম্পোজিট ডিভিশন), এমপি সোয়েটারস লিমিটেড গাজীপুরের শ্রমিক ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ৩১/১২/২০২৪ তারিখে ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান করে আগামী ০১/০৫/২০২৫ তারিখ থেকে কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্যাংকিং জটিলতা নিরসন না হওয়া নিম্নে উল্লেখিত শ্রমিক ও কর্মচারীরা পূর্ব ঘোষিত (৩১ ডিসেম্বর ২০২৪) নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস আগেই ১ মার্চ থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে ছাঁটাই করার কারণে শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।এসময় শ্রমিকরা কেয়া কসমেটিকস কারখানার প্রাধান ফটকে গিয়েও বিক্ষোভ করতে থাকেন।খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কোনাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।তবে শ্রমিকরা তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
কারখানার কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, ঈদের আগে এতগুলো শ্রমিক ছাঁটাই মানবিক কারণে হলেও সঠিক হয়নি। অন্যদিকে শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে কিন্তু পাওনাদি পরিশোধ করছে না। পাওনাদি ছাড়া শ্রমিকরা কারখানা এলাকা ত্যাগ করবেন না।
এ বিষয়ে কেয়া গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপনারা জানেন এখানে প্রায় এক হাজার বধির শ্রমিক রয়েছেন।তারা মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন, তারা কর্মসংস্থান চান।পরে তাদের কথা চিন্তা করে বধির ও অসহায়দের দিয়ে কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি নোটিশ করেছি। যেহেতু বেতন দিতে পারছি না, এজন্য ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ছাঁটাই করা শ্রমিকদের সব পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করা হবে। আইনে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করার কথা থাকলেও আমরা ২৪ মার্চ পাওনা পরিশোধ করবো।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম দৈনিক বাংলার বিপ্লবকে বলেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।